মোঃআবু কাওছার মিঠু
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কারখানার বিষাক্ত পানির কারণে ৩ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় ওই এলাকায় বসবাসকারী প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অসুস্থ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

গত শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় খামারির পুকুর থেকে মরা মাছ তুলতে দেখা গেছে।

পুকুরটির মালিক হাসনাত মিয়া জানান, তিনি কয়েক বিঘা জমির পুকুরে কাতল, রুই, তেলাপিয়া ও কার্প মাছসহ নানা প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছেন। কিন্তু গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তার পুকুরের পাশে ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড নামের একটি ডায়িং কারখানা পাইপ দিয়ে তাদের বিষাক্ত পানি পুকুরের পাশে ডোবায় ছেড়ে দেয়। পরে বৃষ্টি হলে সকালে ওই ডোবাটি ডুবে গেলে কারখানার বিষাক্ত পানি পুকুরে ডুকে যায়। পরে পুকুরে চাষের জন্য ছাড়া প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ মরে পানির উপর ভাসতে দেখেন তিনি।

তিনি বলেন, কারখানার বিষাক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় সকাল থেকেই মাছ মরা শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে কারখানার দায়িত্বরত একজন ব্যক্তি আমাকে ফোনে জানান অভিযোগ না করতে তারা আমার মাছের ক্ষতিপূরণ দিবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, আমরা এখানকার কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু এখানকার কারখানা গুলো পানি সুদানাগার প্লান (ইটিপি) থাকলেও তারা তা ব্যবহার না করে পাইপের মাধ্যমে এলাকায় বিষাক্ত পানি ডোবায় ছাড়ছেন। একটু বৃষ্টি হলেই ডোবা ডুবে গিয়ে চলাচলের সড়ক উঠে যায়। আমরা চলাচল করতে গেলে পায়ে পানি লাগে এতে আমাদের পায়ে নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দিচ্ছে।
এসব বিষয়ে কথা বললেই স্থানীয় তারাবো পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী (ফেল করা) রিপন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মামলা হামলার হুমকি ধামকি দেন। তাছাড়া তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এই এলাকায় বসবাস করায় প্রতিবাদ করতে ভয় পান বলে জানান। এ অবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তির দাবিও জানান তারা।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি রিপন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের কারখানার পানি ইটিপি প্লানের মাধ্যমে সুদানাগার করে ছাড়া হয়। এখানে শুধু আমাদের কারখানার পানি ছাড়া হয় তা নয় সকল কারখানার পানি ছাড়া হয়। কারো কোন ক্ষতি হলে সামনাসামনি বলুক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড কারখানার যোগাযোগ করা হলে ওয়েস্ট নিটওয়ার লিমিটেড এর মালিক ফরিদ কথা বলতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর (UFO) বলেন আমাদের উপজেলায় দূষিত পানি পরীক্ষার জন্য তেমন কোন সরঞ্জাম নেই তবে আমরা ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো। কারখানা কে লিগেল নোটিশ প্রদান করবো। শিল্প কারখানা আইনে তার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *