আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুদ্ধ সুবিধাভোগীসহ সংশ্লিস্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা। আর অনিয়মের বিষয়টি খুতিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের।

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমারের সাক্ষরিত টিসিবি পন্য বিক্রয়ের ক্যালেন্ডার থেকে জানা যায়, গেল ৭ অক্টোবর ওই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদে সুবিধাভোগীদের মাঝে টিসিবি পন্য বিতরণ করা হবে। কিন্তু সেদিন পন্য বিতরণ করা হয়নি।

পরে গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সংশ্লিস্ট ডিলারের ইচ্ছেমত স্থান পরিবর্তন করে তা বিতরণ করা হয় ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতিত অন্যস্থানে। অথচ প্রশাসনের তালিকায় স্থান দেয়া ছিল ওই উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ।

তারপরেও টিসিবি পন্য বিতরণ হচ্ছে বিভিন্নভাবে খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ছুটে আসেন সুবিধাভোগীদের মধ্যে অনেকেই। প্রচারণা ছাড়াই এক স্থানের পণ্য অন্য স্থানে বিতরণের ফলে অনেক ক্রেতা নির্দিষ্ট স্থানে পণ্য কিনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরছেন। আবার অনেকেই হয়রানি শিকার হয়ে টিসিবির পন্য নিতে ছুটে গেছে ডিলারের মনোনীত স্থান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পল্লী বিদ্যুত জোনাল অফিসের সামনে। এমন অসস্থায় ক্ষুদ্ধ জনপ্রতিনিধিরাও।

এসময় পণ্য ক্রয়ে এসে কার্ডধারিরা অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্যরা আগেই জানিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবি দেয়া হবে। অটোভাড়া করে এসে এখন জানতে পারছি পরিষদ থেকে ১০ কিলোমিটার দুরে টিসিবি দেয়া হচ্ছে। এতো খরচ করে টিসিবি নেয়ার চেয়ে না নেয়া ভাল। শুধু হয়রানী করা ছাড়া কিছু না। সরকারি মাল কম দামে পাওয়ার আশায় আসলেও না নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আশরফুল ইসলাম, মুক্তাদুর রহমান, মাহবুব আলম, রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কাগজে কলমে আছে টিসিবির পন্য বিক্রি করা হবে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে। কিন্তু ডিলার কাউকে অবগত না করে তার ইচ্ছেমতো দশ কিলোমিটার দুরে গিয়ে পন্য বিক্রি করেছে। এতে অনেক সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হয়েছে। সুবিধাভোগীরা খবর পেয়ে পন্য ক্রয়ে ছুটে আসে ইউনিয়নে কিন্তু আমরা তার উত্তর দিতে পারিনি। আর এটি করা হয়েছে পণ্য লুট করতেই। বিষয়টি দুঃখজনক জানিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।

অভিযোগের বিষয়ে দুওসুও ইউনিয়নের টিসিবি পণ্যের নির্ধারিত ডিলার রোকনুজ্জামান সায়েদী দাবি করে বলেন, কোন স্থানে পন্য বিক্রি করা হবে তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। তিনি অনুমতি দিয়েছেন বলেই স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে তবে অনিয়ম করে বিক্রির কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।

আর দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক মো: সোহেল রানা জানান, কাগজে-কলমে আমি জানি টিসিবি পণ্য পরিষদ থেকে বিক্রি করা হবে। তাই আমি কার্ডধারীদের অবগত করেছি। তারা আসছে পণ্য কিনতে কিন্তু ডিলারের কোন খোঁজ নেই। ডিলার আমার কথা শুনছে না তার মত করে সে টিসিবি বিক্রি করছে। জেলা প্রশাসক বিষয়টি নজরে এনে ব্যবস্থা নিবেন এমন আশাবাদি তিনি।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, সুবিধাভোগীদের স্বার্থে সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *