আসলাম উদ্দিন আহম্মেদ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে স্ত্রীকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে সত্য চন্দ্র শীলকে সপ্তাহখানেক আগে পুলিশ আটক করে।

এরপর তিনি কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দি অবস্থায় গত ২৬ জানুয়ারী শুক্রবার বিকেলে সত্য চন্দ্র শীল নিজে শরীরে আগুন দেন বলে দাবী করেন কারাগারের জেলার আবু সায়েম। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার আবু ছায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিকালে কুড়িগ্রাম কারাগারের ভেতরে সত্য চন্দ্র শীল নিজ শরীরে আগুন দেন বলে দাবি করেছেন জেলার আবু ছায়েম। তিনি আরোও জানান, ‘কারা হাসপাতালের পেছন দিকে উত্তর পাশে নিজ শরীরে আগুন দেন সত্য চন্দ্র শীল। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি।’কারাবন্দি অবস্থায় আসামি নিজ শরীরে আগুন দেওয়ার সুযোগ পাওয়া প্রশ্নে জেলার বলেন, সম্ভবত সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে সে লুকিয়ে নিজ শরীরে আগুন দেয়। আমাদের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’

কারারক্ষীদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে জেলার বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে তিন জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেল সুপার মোঃ শফিকুল আলম বলেন, ‘আসামি নিজেই শরীরে আগুন দিয়েছে। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

কারাবন্দি আসামি অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’এর আগে, গত রবিবার (২১ জানুয়ারি) ভোররাতে নাগেশ্বরী পৌর এলাকার কবিরের ভিটা গ্রামে নিজ ঘরে গৃহবধূ লতা রানীকে (৪০) ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী সত্য চন্দ্র শীল কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করেন তাদেরই দুই ছেলে। গৃহ বধুর ঘরের বিছানার নিচ থেকে রক্তমাখা কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ।

২৬ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত সত্য চন্দ্র শীল ঘটনার পর পালিয়ে যান। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানা পুলিশের সহায়তায় সীমান্ত এলাকায় তার ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন (২২ জানুয়ারি) আদালতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সত্য চন্দ্র শীল। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *