মোঃ মাসুদ রানা রিপোর্টার

সৈয়দপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ‘রেলওয়ে মেডিকেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠার জন্য ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকার পরিবর্তে রেলওয়ের পরিত্যক্ত, অব্যবহৃত জায়গা নির্ধারণের দাবীতে সভা করেছে ৫ সহস্রাধিক মানুষ। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে শহরের সাহেবপাড়া মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল একাডেমী প্রাঙ্গণে এর আয়োজন করা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন। বক্তব্য রাখেন ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রুবিনা সাকিল, ১৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ও কলামিস্ট মজিবর রহমান, রেলওয়ে কারখানা শ্রমিকলীগ নেতা ও অনলাইন এক্টিভেস্ট জহিরুল ইসলাম, যাদু শিল্পি মানোয়ার হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালের আধুনিকায়নসহ একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কিন্তু তাঁর এই বদান্যতাকে পুঁজি করে আমলাতান্ত্রিক দূরভিসন্ধীর মাধ্যমে রেলওয়ে ঐতিহ্যবাহী আবাসিক এলাকা থেকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হাজার হাজার মানুষকে উচ্ছেদের অপচেষ্টাকে ঘৃণা জানাই।

উন্নয়নের নামে নিম্ন আয়ের লোকজনকে বাস্তুহারা করার সিদ্ধান্ত কখনই প্রধানমন্ত্রী নেননি। তিনি হয়তো জানেননা যে বর্তমান রেলওয়ে হাসপাতাল কে কেন্দ্র করে মেডিকেল কলেজ করা হলে ন্যুনতম ১০ হাজার মানুষ মাথা গোজার ঠাঁই হারাবে। তাছাড়া এখানে দশ একর জমি নিতে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে মাত্র ৩০০ মিটার দূরেই রেলওয়ে কারখানা। কুচক্রী মহল প্রধানমন্ত্রীকে না জানিয়েই বা ভুল তথ্য দিয়ে স্থানীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিভ্রান্ত করে লোকজনকে গৃহহীন করতে চাচ্ছে। আমরা এই জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাই।

তারা বলেন, সৈয়দপুর শহরেই রেলওয়ের শত শত একর ফাকা জমি আছে। যেগুলো ভূমিদস্যুরা দখল করে আছে। সেসব জায়গায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হলে জমিগুলো যেমন দখলমুক্ত হবে তেমনি নিরিবিলি, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ও প্রশস্ত জায়গায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মানে সুবিধাজনক হবে। আর এই আবাসিক এলাকা যেমন ঘনবসতি, তেমনি শত বছরের পুরাতন অবকাঠামো। এখানে মেডিকেল কলেজ করলে তা কোনভাবেই স্থায়িত্বপূর্ণ হবেনা।

তাই আমাদের দাবী এব্যাপারে ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উচ্ছেদের চেষ্টা করা হলে আমরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাবো, আন্দোলন করবো। এতে যদি গুলি চলে তাহলে আমাদের লাশ প্রথমে পড়বে। আমরা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছি। প্রয়োজনে সাক্ষাত করে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবো। তবে সৈয়দপুর রেলওয়ের আইওডাব্লু এবং এইএন সহ অন্যান্য কর্মকর্তার প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে জনদাবীর প্রেক্ষিত বাস্তবতার আলোকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিবেচনার জন্য জানান। নয়তো আপনারাই ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *