মোঃআরিফুল হক (আরিফ), পাটগ্রাম (লালমনিরহাট)
লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথরভাঙ্গা মেশিনে কাজ করতে গিয়ে পাটগ্রাম ধবলসুতি এলাকার লাইজু ইসলামের ডান হাত আজ পুরোটাই বিকল হয়ে গেছে। মেশিনের বেল্টে হাত ঢুকে গিয়ে ডান হাতের রগ ছিড়ে যায়, হাড় ভেঙ্গে যায়।
ভুক্তভোগী লাইজু জানায়, কাজ করার সময় সে খুব ক্লান্ত ছিল। বেল্টে আটকে যাওয়া একটি পাথর বের করতে গিয়ে ডান হাত বেল্টের ভিতরে ঢুকে গিয়ে হাত ভেঙে যায়। কিন্তু রংপুরে এর চিকিৎসা সঠিকভাবে না হওয়ায় কয়েকমাস থেকে লাইজু তার হাত কোনোভাবে নড়াচড়া করতে পারে না। জানা যায়, লাইজুর ডান হাতের রগ ছিড়ে যাওয়ার বিষয়টি পরবর্তীতে ঢাকায় পরীক্ষা করার পর ধরা পড়ে, যা এর আগে রংপুরে ধরা পড়েনি।
মুলত লাইজুর চিকিৎসা হয়েছে রংপুর ওরিয়ন হাসপাতালে। পরিবার ও মালিক পক্ষের দাবি ভুল চিকিৎসার কারণে তার হাত আজ অচল প্রায়। হাসপাতালটিতে শুধুমাত্র হাড়ের চিকিৎসা করা হয়, কিন্তু রগ ছিড়ে যাওয়ার বিষয়টি তখনো কেউ জানতো না বা ধরা পড়েনি বলে জানা যায়। রিপোর্টে দেখা যায়, ওরিয়ন হাসপাতালে ডা. রাশেদুল আমীর হাড়ের চিকিৎসা সম্পন্ন করেছেন। তিনি জানান, অনেক রোগীই আসে, আর লাইজুর চিকিৎসা ভুল হয়েছে কিনা তা কাগজপত্র দেখে বলতে হবে। এছাড়া আমি কিছু বলতে পারবো না।
এদিকে দায় এড়াতে ওরিয়ন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম রানা জানান, আমাদের এখানে অপারেশন হয়নি, এটা হয়েছে রেডিসন হাসপাতালে। আর সবকিছু মুলত পুলক নিয়ন্ত্রণ করতো। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রধান মাধ্যম মামুনুর রশীদ পুলক জানান, অপারেশনের সময় আমি ওখানে ছিলাম। অস্বীকার কেনো করবে? অপারেশন ওরিয়ন হাসপাতালে করা হয়েছে বলে তিনিও দাবি করেন। এসময় তিনি লাইজুর চিকিৎসায় যেহেতু একটা সমস্যা হয়ে গেছে উল্লেখ করে বিষয়টি আমাকে বা রাশেদুল স্যারকে বললে একটা সমাধান করা যেতো কিংবা স্যার আর্থিক সহযোগিতাও করতে পারে বলে জানান।
লাইজুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সাজেদুর রেজা ফারুকী অপারেশনের মাধ্যমে তার হাত সচল করা যেতে পারে বলে জানান।
তাই নতুন করে আরও প্রায় ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। এর আগেও লাইজুর চিকিৎসায় অনেক অর্থ ব্যয় হওয়ায় উপস্থিত অর্থ যোগান অসহায় পরিবারটির পক্ষে একেবারে অসম্ভব। তবে শুরু থেকে লাইজুর পাশে থাকা পাথর ভাঙা মেশিনের মালিক আবুল কাশেম তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করার কথা জানান। উন্নত চিকিৎসা শেষে লাইজু স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও আগের মতো হাতের শক্তি ফিরবে কিনা সেই সন্দেহ থেকেই যায়। তবে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি, ভুল চিকিৎসার শিকার লাইজুর বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত খতিয়ে দেখা দরকার।