বন্দর প্রতিনিধি:

বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুম্মান(৪৫)কে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে কথিত সাংবাদিক শেখ আরিফ ওরফে তোতলা আরিফের বিরুদ্ধে।

কথা কাটাকাটির জের ধরে শেখ আরিফের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী ভাতিজা শেখ সিফাত ওরফে কাটা সিফাত বাহিনী জুম্মানের বাড়িতে অনধিকার প্রকাশ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে দেয় বলে জানিয়েছে জুম্মানের পরিবারের সদস্যরা। লৌমহর্ষক এই ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার (২৭ আগষ্ট) বিকেল ৫টায় কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দী এলাকায়। আহত জুম্মানকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শেখ আরিফ ও শেখ সিফাত বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার বিচার চেয়ে আহত জুম্মানের মেয়ে জুম্মানের ফেসবুক আইডি থেকে তার বাবার ভিডিও ও ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে লিখা হয়,‘‘সন্ত্রাসী শেখ আরিফ এই কুলাঙ্গার কখনও সাংবাদিক হতে পারেনা ও দেশের শত্রু জাতির শত্রু আমার আব্বুকে শেখ আরিফ গং কুপিয়ে লাশ বানিয়ে চলে যায় এই কুলাঙ্গারকে অতি তাড়াতাড়ি আইনের আওতায় আনা হোক’’ জুম্মানের মেয়ের পোষ্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তার দলীয় নেতৃবৃন্দের কোন হস্তক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

বিষয়টি সর্বমহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী সন্ত্রাসী আরিফ ও তার ভাতিজা বর্তমান সময়ে বন্দরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ সিফাত ওরফে কাটা সিফাতের বিরুদ্ধে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এ ঘটনায় জুম্মানের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে মূল হোতা শেখ আরিফ,তার ভাতিজা শেখ সিফাত ওরফে কাটা সিফাত,ছোট ভাই শেখ শাহিন ওরফে রিং শাহিন,শেখ যুবায়ের ওরফে চিকনা যুবায়ের,ভাগিনা ইমন,মাতা রাশিদা,মামা সানোয়ার ওরফে ফাকাপ সানোয়ার,কাটা সিফাত বাহিনীর অন্যতম সদস্য মামুন,ইয়াসিন,আউয়াল ও মনিরসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ জানান,অভিযোগ তদন্ত শেষে মামলায় রূপান্তর করা হবে। মামলার পরপরই আসামীদের গ্রেফতার অভিযান চালানো হবে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,গত ২৭ আগষ্ট রোববার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুম্মানকে অজ্ঞাতনামা একটি নাম্বার (০১৬৩৪৩৬৮৫৪৪)থেকে তাকে ডিসলাইনের কথা বলে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদ সংলগ্ন বালুর মাঠে ডেকে নেয়। জুম্মান সেখানে যাওয়ার পর পরই শেখ আরিফ,কাটা সিফাত,রিং শাহিন,চিকনা যুবায়েরসহ অভিযোগে উল্লেখিতরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র কুড়াল,রামদা,চাপাতি,সামুরাই,হকিষ্টিক ও কাঠের স্ট্যাম্প দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কোপায়।

এক পর্যায়ে তোতলা আরিফ ও কাটা সিফাত দেয়ালে ঠেকিয়ে তাদের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে জুম্মানকে জবাই করার জন্য উদ্যেত হলে জুম্মান তাদের রাম দা হাত দিয়ে বাধা দেয়। এ সময় অন্যরা জুম্মানের দু’ হাত ধরে রাখে এবং আরিফ ও সিফাত পায়ে উপযুর্পরি কোপায়। শেষ পর্যায়ে আউয়াল জুম্মানের নাকের মধ্যে কোপ দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে ডাক চিৎকার করে। জুম্মানের ডাক চিৎকারে আশ পাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা বেগতিক বুঝে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত জুম্মানের আশংকা কাটেনি। উল্লেখ্য,শেখ আরিফ ঢাকার একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার বন্দর প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী,ড্রেজার সিন্ডিকেট ও সন্ত্রাসীদের শেল্টার দিয়ে আসছে। এছাড়াও তার ভাতিজা শেখ সিফাত ওরফে কাটা সিফাত বাহিনী এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের লিডার হিসেবে বন্দর শাহী মসজিদ ও তার আশ পাশের এলাকায় প্রায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখমের ঘটনাসহ ছিনতাই,চাঁদাবাজী রাহাজানি ও নানা প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আসছে। তার বিরুদ্ধে বন্দর থানা প্রায় অর্ধডজন মামলাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *