আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের পুলিশ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার কাজেই শুধু নিয়োজিত নয় তারা অসহায় মানুষদের জন্য মানবিকও বটে, তার এক অন্যন্য উদাহরণ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান স্যার। ঘরে ঘরে এমন সন্তান জন্ম লাভ করুক। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে সবসময় ভালো রাখেন।
প্রতিবেদককে সামনে পেয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে এমন করেই বললেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার মধ্যহাড়িয়া গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুল খালেকের স্ত্রী অসহায় পঙ্গু মাতোয়ারা বেগম।
মাতোয়ারা বেগম জানান,তিনি একসময় বিরল রোগে আক্রান্ত হন, চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা করতে গিয়ে একসময় তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। পঙ্গুত্ব অবস্থায় বিছানায় পড়েছিলেন দীর্ঘদিন। পরে চিকিৎসক কৃত্রিম পা লাগানোর পরামর্শ দিলেও টাকার অভাবে বিকলাঙ্গ হয়েই থাকেন তিনি।
বিষয়টি নজরে এনে চলতি বছরের গত ৫ই আগস্ট মাতোয়ারা বেগমের কৃত্রিম পা লাগানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতার চেয়ে পোষ্ট করেন ‘রাণীশংকৈল ফেসবুক ব্যবহাকারী’ গ্রুপের মডারেটর ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জেড এম বর্নী।
আর্থিক সহযোগিতার এমন বিষয়টি নজরে আসে ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের। বর্তমানে তিনি পুলিশ সুপার,(কমান্ডার) সিকিউরিটি এন্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন-১ (এসপিবিএন-১)এ ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন ।
ফেইসবুকে বিষয়টি দেখার পরই তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাতোয়ারা বেগমের কৃত্রিম পা লাগানোর চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব নিতে রাজি হন।
মাতোয়ারা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হলে একমাসের জন্য থাকা খাওয়া ঢাকায় যাওয়া আসার খরচ এবং চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহন করেন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
তার মানবিকতায় ও ব্যক্তিগত আর্থিক সহায়তায় চিকিৎসা গ্রহণ করে মাতোয়ারা বেগম আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। ঢাকার সিআরপি’র চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী আরও কিছু দিন গেলে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।
মাতোয়ারা বেগম জানান, নিজ গ্রামে এত কোটিপতি আর লাখপতি মানুষ থাকতেও কেউই কোনদিন আমার বিপদে এগিয়ে আসেনি। মনিরুজ্জামান স্যার একাই এতো গুলো টাকা দিলো। আমি আবার চলাফেরা করতে পারব। আল্লাহ এমন মানুষকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রেখে মানুুষের সেবা করার তৌফিক দান করুক।
ভবানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সারওয়ার হোসেন বলেন এমন মানবিক কর্মকর্তাদের জন্য পুলিশের সুনাম এখনো অক্ষুন্ন আছে। তাদের এমন কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরাও যেন সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি সেটাই আশা করি।
রাণীংশকৈল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ জানান, পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান স্যার ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক অসহায় মানুষকে এভাবে সহযোগিতা করেছেন।
মানবিক কাজে সার্বিক সময় তিনি সকলের পাশে দাড়িয়েছেন। নিজ অর্থায়নে এসব করেন তিনি। এই মানবিক কর্মকর্তা এর আগেও অনেক প্রশংসিত হয়েছেন ও তাকে নিয়ে আমাদের গর্ব হয়।