নিজস্ব সংবাদদাতা: ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে লাল পতাকার বিশাল এক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেল নগরীর চাষাঢ়াস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এ বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিলের আয়োজন করা হয়।

ফতুল্লার বিসিক শিল্পাঞ্চলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্রোণী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের ৮৩০ জন শ্রমিক সহ শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে, মামলা প্রত্যাহার ও বকেয়া বেতন সহ ছাটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ সহ ক্ষতিপূরণের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিলের আয়োজন করে সংগঠনটি। এসময় হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকরা বিক্ষোভে অংশ নেয়।

ও-ই সংগঠনের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু’র সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ।

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিভিন্ন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন- অবন্তী কালার টেক্স এর মালিক শ্রম আইন লংঘন করে মাসের পর মাস শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখে। প্রত্যেক মাসেই বেতন নিয়ে তাল-বাহানা করে। কোন শ্রমিক কথা বললেই তাঁকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। হুমকি-ধামকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী একজন শ্রমিক কোন কারখানায় এক মাস কাজ করার পর পরবর্তী মাসের ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তাঁর বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও অবন্তী কালার টেক্স এর মালিক আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। কারখানার মালিক আসলাম সানি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার কারণে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন ও হয়রানি করে যাচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন- মার্চ মাসের বকেয়া বেতনের দাবীতে শ্রমিকরা রাস্তায় নামলে শিল্প কারখানা সংশ্লিষ্ট সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন সংকট নিরসনে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো নিরিহ শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি চালায়। এ ঘটনায় ৮৩০ জন শ্রমিকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। হুমকি-ধামকি দিয়ে ভয়তীতি দেখিয়ে শ্রমিকের দাবী আদায়ের আন্দোলন দমিয়ে রাখা এবং ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। অবিলম্বে শ্রমিক হয়রানির মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ সহ চাকুরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনানুগ যাবতীয় পাওনা পরিশোধের আহ্বান জানান তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কাউসার আহমেদ পশালে’র নেতৃত্বে বিশাল এক লাল পতাকার বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার হতে পুরাতন কোর্ট হয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভে এসে শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *