নারায়ণগঞ্জ থেকে মোঃ শহিদ হোসেন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই সারাদেশে শুরু হয়ে গেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি। এ সময়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীণ ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচন দাবি করেছে স্থানীয়রা।

গত ২৩ সেপ্টেম্বও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে চেয়ারম্যানের পদটি শূণ্য হয়ে যায়। আর এই উপ-নির্বাচনে প্রয়াত স্বপন চেয়ারম্যানের পরিবার থেকে তার স্ত্রী সেলিনা সুলতানা ও পুত্র খন্দকার তাইহান তাবাসসির সোয়াদ এর মাঝ থেকে যে কোনো একজনকে প্রার্থী করার দাবিও উঠেছে ভোটারদের মধ্যে।

জানা যায়, প্রায় চার মাস পূর্বে না ফেরার দেশে চলে যান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন। তাঁর এই চলে যাওয়ায় ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকাবাসী তথা ফতুল্লাবাসীর মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া।

দীর্ঘ এক যুগ ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন যে কতটা জনপ্রিয় ছিল তা প্রমাণ মিলেছিল তার জানাযার নামাজে। মরহুমের জানাযার নামাজের সময়ে বহুতল বিশিষ্ট ফতুল্লা বাজার জামে মসজিদটি পরিপূর্ণ হয়ে প্রধান সড়কেও দাড়িয়েছিলেন মুসুল্লীরা।

স্থানীয় এলাকাবাসী বলছেন, স্বপন চেয়ারম্যানের জানাযায় যে সংখ্যক লোক হয়েছিল সেটা বিগত দিনে দেখা যায়নি। তিনি যে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন মৃত্যুর পরেই সেটা বুঝা গেছে।

এদিকে স্বপন চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে আসন্ন ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে কে প্রার্থী হবেন সেটা নিয়ে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও মনোনয়ন যুদ্ধে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে স্থানীয় এলাকাবাসী বলছেন প্রয়াত স্বপনের পরিবার থেকেই তার উত্তরসূরী বিবেচনা করা হোক। কারণ বিগত এক যুগ ধরে স্বপন চেয়ারম্যান যেভাবে রাতদিন সাধারণ মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন সে কথা জানাযায় আসা অনেকেই স্বীকার করে গেছেন।

প্রয়াত স্বপন চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেলিনা সুলতানা ও পুত্র খন্দকার তাইহান তাবাসসির সোয়াদ শিক্ষিত। তাদের মধ্যে যেকোন একজনকে উত্তরসূরী হিসেবে মনোনীত করা হলে তারাও যোগ্যতার সাক্ষর রাখতে পারবেন। যে কারণে এ বিষয়ে স্থানীয় এমপি শামীম ওসমানসহ ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদে এর আগে দীর্ঘ ৩ দশ ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন নূর হোসেন। তার পরে ২০১১ সালের ১৬ মে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন। দীর্ঘ ৩০ বছর পর ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন (নৌকা)প্রতিক নিয়ে পেয়েছিলেন ২৮ হাজার ৬৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহজাহান আলী (হাতপাখা) পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ১৭৭ ভোট। গত ২৩ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান স্বপন চেয়ারম্যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *