শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ক্ষমতা বা সামর্থ্য অনুযায়ী নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় (জিপিইউএফপি) বর্তমানে ইউরিয়া সার উৎপাদন হার ১০০%। নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এখানে সার উৎপাদন চলছে। বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (MHI) ও চীনের সিসি সেভেন এর যৌথ প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী আজ ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফপি) পরিদর্শন শেষে কারখানার ভিআইপি গেস্ট হাউজে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

এসময় নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দীলিপ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মাসুদা সিদ্দিক রোজী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শামীমুল হক, ‘ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্প’ পরিচালক মো. সাইদুর রহমান, MHI এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর Hirotesi Suzuki ও প্রজেক্ট ম্যানেজার Yuichi Saima প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমার নিজ নির্বাচনি এলাকা নরসিংদী অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এ সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এটি পুরোপুরি চালু হওয়ার ফলে বাংলাদেশের সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়েছে ও কৃষি ক্ষেত্রে সার সংকট দূর হয়েছে। নতুন করে ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সর্বোপরি, এটি দেশের কৃষি উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক অবদান রাখছে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে সার উৎপাদন আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোলা ও আশুগঞ্জে আরো দু’টি সার কারখানা স্থাপন করা হবে। সৌদি আরবে একটি ডাই-এমোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। মোদ্দাকথা, বর্তমান সরকার সার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, আমরা যদি আমাদের সার কারখানাগুলোকে সঠিক ও সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতায় পরিচালনা করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের আর কোনোদিন সার আমদানি করতে হবে না। প্রয়োজনে আমরা দেশের বাইরে সার পাঠাতে বা রপ্তানি করতে পারবো।

মন্ত্রী সার কারখানাটির বাল্ক স্টোরেজ ও প্যাকেজিং ইউনিট পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এ ইউরিয়া সার কারখানাটির নিয়মিত উৎপাদন ও মনিটরিং নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরসিংদীর পলাশে সার কারখানাটি উদ্বোধন করেন। জিপিইউএফপি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ ধরণের বৃহত্তম কারখানা। ১১০ একর জমিতে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন ক্ষমতা ২৮০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *