আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ে ঋণের দায়ে এক ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। আর এ জন্য তিনি সুইসাইড নোটে ৭ জনকে দায়ী করেছেন।

নিহত শফিকুল ইসলাম মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মাদ্রাসা পাড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেছিলেন।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার সদর থানার 
ও‌সি এ‌বিএম ফি‌রোজ ওয়া‌হিদ।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) শফিকুল ইসলামের পরিবার তার লাশটি তাদের ঘরের বারান্দায় দেখতে পান।

এ বিষয়ে শফিকুল শফিকুল ইসলামের পরিবার বলেন, শফিকুল ইসলাম প্রতিনিয়ত যেভাবে আসতেন সেভাবেই বাসায় এসে রাতে আমাদের সাথে ঘুমান। সম্ভবত রাত তিন থেকে চারটার মধ্যেই তিনি আত্মহত্যা করেন। তবে কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সেটা আমরা কিছু জানি না। আমাদের এ বিষয়ে কোনো জানা নেই। তিনি একটি কাগজে ৭ জনের নাম লেখে যান। আর আমরা টাঙ্গাইল থেকে এসেছি। আমাদের এখানে আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত শফিকুল ইসলাম তার পরিবার নিয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মাদ্রাসা পাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি ফেড়ি করে কাপড় ব্যবসা করতেন। এছাড়াও পুলিশ লাইনের এখানে আশরাফুলের হোটেলের সামনে একটি পানের দোকান রয়েছে। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাতজন। তার পাঁচ মেয়ে ও ১ জন ছেলে রয়েছে। এই বড় পরিবার তিনি চালাতে গিয়ে প্রায় হিমশিম খেতে ছিলেন। এ সময় তিনি বেশ কয়েকজনের কাছে ঋণ মাহাজন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঋণ মাহাজনের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে বলে জানা যায়। এতেই তিনি চিরকুটে সাতজনের নাম লিখে আত্মহত্যা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, শফিকুল এর কাছে বেশ কয়েকজন টাকা পেত। সেই টাকার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল হয়তো। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই হয়তোবা তিনি আত্মহত্যা করেছে।

সাতজনের মধ্যে রয়েছেন মোঃ জুয়েল ইসলাম মোঃ হুমায়ুন কবীর, মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম মোঃ আশরাফুল ইসলাম, মোঃ হাবু,সহ ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের কলোনির একজনের।

এ বিষয়ে চিরকুটে যাদের নাম রয়েছে তাদের একজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক ছিল না, তবে যাদের নাম রয়েছে তাদের অনেকের সাথে তার অর্থনৈতিক লেনদেন ছিল সেটা আমি জানি। তবে তাদের সম্প্রীতি সময়ে কি হয়েছে সেটা সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা।

এ বিষয়ে মোঃ হুমায়ুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মানুষকে লোন দিয়ে থাকি তবে শফিকুল ইসলামকে কোন প্রকার লোন দেই নি। তিনি আমার নাম কেন লিখেছেন সেটা আমি জানি না। তবে আমি ছাড়া বাকি কয়েকজনের সাথে তার লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি )এ‌বিএম ফি‌রোজ ওয়া‌হিদ বলেন, পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। তিনি চিরকুটে কয়েকজনের নাম লিখে আত্মহত্যা করেছেন এটি কি তিনি লিখেছেন নাকি কাউকে ফাঁসানোর জন্য অন্য কেউ লিখে রেখেছেন সেটা আমরা তদন্ত করে দেখতেছি। এই মুহূর্তে এছাড়া বাকি কিছু বলা সম্ভব না।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন , পোস্টমটেম করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পরে রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *