আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি;

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেমেছে ছাত্র-জনতা। আন্দোলন শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে সাংবাদিকদের জানানো হয়, আমাদের বুকে গুলি করা হলেও তারা রাজপথ ছেড়ে যাবে না, আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

রাণীশংকৈল হ্যালিপেট মাঠ থেকে ছাত্র জনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শিবদীঘি চত্বরে এসে ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর ও ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে।
এসময় ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী তাদের মিছিল করতে নিষেধ করেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মিদের নিষেধ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করেন। তখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।এ সময় মহাসড়ক অবরোধ হলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থলে রাণীশংকৈল উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ হোসেন বিপ্লব ও ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত করার জন্য বলেন। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি পালন করার অনুরোধ করেন। এছাড়াও রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান ও ওসি জয়ন্ত কুমারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেদের নিয়ে আন্দোলনকারীদের ঠিক বিপরীত দিকে সতর্ক অবস্থায় অবস্থান নিয়েছিলেন।

বিক্ষোভ এবং অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবক এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মী-সদস্যরা অংশ নেন।

আন্দোলন শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, ‘অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এসে আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আর খুনিরা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের এ অস্থিরতা শাসক বুঝছে না। আমরা ভাই-বোন হত্যার বিচার চাই। আজ বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলন করছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গুলি করা হলেও আমাদের আন্দোলন চলবে।’

আন্দোলনে অংশ নেওয়া অভিভাবকরা জানান, ‘এখানে তো আমাদের সন্তানরা আন্দোলন করছে। সরকার প্রধান কি আমাদের সন্তানদের কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছেনা?

বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে সারাদেশে ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার হামলা-মামলা প্রত্যাহার, শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি, গুম-খুনের বিচার, দমন-পীড়ন বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় ‍খুলে দেওয়াসহ ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন শ্লোগন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের জন্যেও শ্লোগান দেন তারা।

পরে সেখান থেকে আবার বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় এসে অবস্থান নেয় এবং সন্ধায় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জলনের কর্মসূচি ঘোষনা করে আজকের মতো কর্মসূচির সমাপ্ত করেন তারা।

রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়ন্ত কুমার বলেন,শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালনে পুলিশ কোন ধরনের বাধা দেয়নি। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি বলে তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *