আনোয়ার হোসেন আকাশ
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে নিখোঁজের ১৮ ঘণ্টা পর নদী থেকে দুই সন্তানসহ এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা গ্রামে তীরনই নদীর মিনি কক্সবাজার পশ্চিম ঘাট থেকে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় মরদেহ নদী থেকে তোলা হয়।

মরদেহ উদ্ধারের সময় মায়ের শাড়ির আচল দিয়ে দুই শিশু সন্তানের শরীর বাধা ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

মৃত নারীর নাম নাছিমা বেগম (৩২)। তিনি কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী। মৃত দুই ছেলের নাম শাওন (৮) ও সেফাফাত (৪)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গুলফামুল ইসলাম।

এদিকে মৃত নাসিমার মা খালেদা খাতুন এটিকে হত্যা দাবি করলেও নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম ও শ্বশুর সামসুল হক ঘটনাটি আত্নহত্যা বলে দাবি করছেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা নাকি আত্নহত্যা!

খালেদা বেগমের দাবি, তার জামাই একজন জুয়াড়ু। জুয়ার টাকার জন্য আমার মেয়েকে প্রায় অত্যাচার করত। এ কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে নদীর ধারে মরদেহ তিনটির হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ তিনটি এক জায়গায় পাওয়া গেছে। এটি হত্যাকাণ্ড কি না এখন জানা যায়নি।

নাসিমার ভাই ফারুক আহমেদ জানান, নিখোঁজের দিন সকালে পারিবারিক কলহ থেকে নাসিমা ও তার দুই ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়৷ শশুর বাড়ি থেকে গরু না দেয়ায় ঝগড়া শুরু হয়েছিল। ময়নাতদন্তের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানান তিনি৷

সফিকুল ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লাশ তিনটি হাত শাড়ীর আচল দিয়ে বাঁধা ছিল। এতে অনেকেই ধারণা করছেন, এটি হত্যাকাণ্ড। আবার অনেকে বলেছেন, পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে হাত বেঁধে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে এভাবে আত্মহত্যা করেছে তারা।

কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার নাছিমা দুই বাচ্চাসহ মাঠে গরু চরাতে যান। এ সময় নদীর পাশের মাঠে দুই ছেলে খেলছিল। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন। আজ সকালে নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গুলফামুল ইসলাম মন্ডল জানান, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নারী তার স্বামীর সঙ্গে রাগারাগী করে সন্তানদের নিয়ে নিখোঁজ হন। তাদের পরিবারের লোক আজকে সকালে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তার কিছুক্ষণ পরেই খবর আসে মা ও দুই সন্তানের লাশ পাওয়া গেছে তীরনই নদীতে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

রাণীশংকৈল সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *