বন্দর প্রতিনিধি :
নারায়নগঞ্জ বন্দরে চোর আখ্যা দিয়ে রাস্তা থেকে তোলে নিয়ে পল্টন (৩৫) নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে ২ ঘন্টা আটক রেখে শারীরিক নির্যাতনের পর পুকুরের পানিতে চুপিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে খোকন ও নাঈমসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় বন্দর থানার ২০নং ওয়ার্ডের দড়ি সোনাকান্দাস্থ বাইতুল সালাত জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত পল্টন বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত সাইদুল ইসলাম মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী মাধ্যমে খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। সে সাথে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লিপি বেগম (৪৫)কে আটক করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের বড় বোন নুরুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন দুপুরে আটককৃত লিপি বেগমসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
অভিযুক্ত আসামীরা হলো বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত আবু বক্কর মিয়ার ছেলে বদমেজাজি খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী লিপি বেগম, একই এলাকার তাজুল ইসলাম মিয়ার ছেলে নাঈম একই এলাকার মজিবর মিয়ার ছেলে ফয়সাল, জায়েদ মিয়ার ছেলে জয়, বোরহান উদ্দিন মিয়ার ছেলে আকিল, জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে রিজমনি একই এলাকার আবু বক্কর মিয়ার স্ত্রী হাম্বিয়া একই এলাকার আরফিত ও শিপলু।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানাগেছে, পল্টন একজন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। সে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন লোকজনদের কাছ থেকে ১০
টাকা চেয়ে নিয়ে জিবীকা নির্বাহ করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় পল্টন দড়ি সোনাকান্দা বাইতুল সালাত মসজিদের সামনে দিয়ে তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে বদমেজাজি খোকন মিয়া ও নাঈমসহ অন্যান্যরা মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক পল্টনকে চোর আখ্যা দিয়ে মসজিদের সাথে থাকা বিদুৎত খুঁটির সাথে বেঁধে লাঠিসোটা দিয়ে বেদম ভাবে পিটিয়ে ডান হাত ভেঙ্গে ফেলে।
নির্যাতেনর এক পর্যায়ে পল্টন অজ্ঞান হয়ে পরলে ওই সময় আরফিত, লিপি বেগম, ফয়সাল, জয়, শিপলু,আকিল রিজমনি ও হাম্বিয়া বেগমসহ অজ্ঞাত নামা আরো ১০/১৫ জন মিলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক পল্টনকে মসজিদের সামনে থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি পুকুরে নিয়ে পানিতে চুপিয়ে শ্বাসরোধ করে। এক পর্যায়ে উল্লেখিতরা পুনরায় মসজিদের সামনে নিয়ে বিদুৎত খুঁটি সাথে বেঁধে রেখে মরিচের ফাঁকি গুলিয়ে নাকে মুখে ঢেলে দেয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ১০টায় তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে থানার হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।